লোভ দেখিয়ে কাজ আদায় করা

‘এস.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেলে তুমি স্মার্টফোন গিফ্‌ট পাবে’, প্রতিদিন ব্রাশ করলে তোমাকে টাকা দিবো.. এরকম লোভ দেখিয়ে আমরা কাজ আদায় করতে চাই আমাদের সন্তান থেকে। সে স্মার্টফেনের লোভে লেখাপড়া করে। এভাবে আরো অনেক রকমের লোভ দেখিয়ে আমরা সন্তান থেকে বিভিন্ন কাজ আদায় করতে চাই। এটি আমাদের সন্তানদেরকে অনেক সময় কাজে উৎসাহিত করলেও এটির নেতিবাচক দিকও আছে। আজ এখানে আমরা সেগুলো নিয়ে কথা বলবো –

স্বল্প মেয়াদী ফলাফল – ভয়ের মতো লোভ-ও খুবই স্বল্প মেয়াদে কাজ করে। এর ফলাফল ক্ষনিকের জন্য। বাচ্চারা পুরষ্কারের লোভে ঠিক কাজটি করে দেয় কিন্তু এর যে আসল অন্তর্নিহিত অনুপ্রেরণা পাওয়া বা সেটা বোঝার ক্ষমতা তৈরী হয় না।

পুরষ্কারের প্রতি নির্ভরতা : এটি সবচেয়ে আশংকাজনক বিষয়। ধীরে ধীরে সে পুরষ্কারের জন্য লোভী হয়ে পড়ে। পুরষ্কার যেখানে নেই, সে কাজ সে করে না। তার আচরণ ধীরে ধীরে ‘পুরষ্কারকেন্দ্রিক’ হয়ে পড়ে। কোন রকম ‘রিওয়ার্ড’ না পেলে সে কাজ করতে চায় না।

কাজের প্রেরণা হ্রাস : লোভ দেখিয়ে কাজ আদায় করলে সে নিজে থেকে কোন কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয় না। যখন তারা সবকিছু থেকে একটা পুরষ্কার আশা করে তখন সে ‘লং টার্ম’ কাজগুলিতে নিরুৎসাহিত হয়। তার ব্রেইন ‘তাৎক্ষণিক রিওয়ার্ড’ পেতে চায়।

নৈতিকতা হারায় : ভবিষ্যতে ঘুষ বা রিওয়ার্ড পাবার জন্যই সে শুধুমাত্র কাজ করতে থাকে। নৈতিকতার ধার ধারে না। ঘুষ পেলে যে কোন কাজই ‘জায়েয’ বলে মনে করে একজন অনৈতিক মানুষে রূপান্তরিত হতে পারে।

ব্ল্যাকমেইলিং : একসময় সে উল্টো তার মা-বাবা থেকে ‘রিওয়ার্ড’ দাবী করতে থাকে। যেমন – এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পাশ করলে আমাকে আইফোন কিনে দিতে হবে। এটি প্যারেন্টদের প্রচণ্ড অস্বস্তি ও টেনশনের কারণ হয়ে পড়ে

আমরা উৎসাহ দেবার জন্য আমাদের সন্তানকে রিওয়ার্ড দিবো কিন্তু রিওয়ার্ড এর লোভ না দেখিয়ে। মনে মনে ঠিক করে রাখবো কী দিবো- কখন দিবো। তাকে জানানোর দরকার নেই। আর প্রতিবার, সবসময় টাকা পয়সা খরচ করে জিনিস কিনে দেবার মাধ্যমে রিওয়ার্ড দিবো না। অনেক সময় ‘নন-ম্যাটেরিয়ালিস্টিক’ জিনিসও অনেক বড় রিওয়ার্ড হতে পারে। ভাবুন তো, কী কী এমন জিনিস যা আপনি আপনার সন্তানকে রিওয়ার্ড হিসেবে দিতে পারে যাতে আপনার পয়সা খরচ তেমন একটা করতে হবে না…

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *