মশা-মাছি প্যারেন্ট (আমার এক বয়স্ক ওয়ার্কশপ পার্টিসিপ্যান্ট বলেন ‘কুত্তা-বিলাই প্যারেন্ট’) ছাড়াও মৌমাছি টাইপের প্যারেন্ট হওয়া যায়, মৌমাছি প্যারেন্ট! মৌমাছি কি করে? সে কক্ষনো ময়লা জিনিষের উপর বসবে না, সে সবসময় ফুলের উপর বসে, ভাল জিনিষের উপর বসে। ভাল জিনিষ ছড়ানোর কাজ করে। সে মধু আহরণ করে এবং ফুলের পরাগ আহরণ করে। সেগুলো সে ছড়ায়। মৌমাছি টাইপের প্যারেন্ট সবসময় বাচ্চার ভাল জিনিষগুলোর দিকে খেয়াল করেন। বাচ্চার ভাল গুণগুলোর উপর ফোকাস করেন। সেগুলো ছড়ানোর কাজ করেন।
বাচ্চার ভাল দিক গুলো নিয়ে কথা বলেন। বাচ্চাকে ভাল কাজের জন্য অনুপ্রাণিত করেন।
আসুন আমরা এ তিন ধরণের প্যারেন্ট এর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করি, একটি নির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ তিন রকমের প্যারেন্ট কীরকম আচরণ করেন।
যেমন – একটা বাচ্চার হাতের লেখা খারাপ।
মাছি টাইপের প্যারেন্ট সবসময় বাচ্চার সামনে ঘ্যান ঘ্যান করবেন, এত বাজে লেখা কেন, হাতের লেখা সুন্দর না কেন, হাতের লেখা ঠিক কর। এগুলো বলতে থাকবেন, এবং সবাইকে বলে বেড়াবেন যে আমার বাচ্চার হাতের লেখা ভাল না।
এই ঘটনায় মশা টাইপের প্যারেন্ট বাচ্চাকে মারবেন, গালি দিবেন, ভয় দেখাবেন, শাস্তি দিবেন, প্রতিদিন জোর করে দশ পৃষ্ঠা হাতের লেখা লেখাবেন।
মৌমাছি টাইপের প্যারেন্ট বলবেন, তোমার হাতের লেখা ভাল আছে, তুমি যদি বেশী বেশী অনুশীলন কর আরও বেশী ভাল হবে লেখা। আর হাতের লেখা খারাপ হওয়া তেমন কোন সমস্যাও না, কোন অসুবিধা নাই। তুমি যখন বড় হবে নিশ্চয়ই ডাক্তার হবে। ডাক্তারদের হাতের লেখা আরও খারাপ।
উনারা বাচ্চার ভাল দিকগুলো তুলে আনবেন, খারাপ দিকগুলো নিয়ে অপমানমূলক বা সংশোধনমূলক কথা বলবেন না। সেগুলিকে একদিনেই ঠিক করে ফেলার চেষ্টা করবেন না। কিন্তু এমন কিছু কাজ করবেন, যাতে সন্তানের খারাপ দিকগুলো তার অজান্তেই ভাল হয়ে যাবে। এটা শিখাটাই হচ্ছে প্যারেন্টিং শিখা। শাস্তি না দিয়ে, মার না দিয়ে, অপমান না করে কীভাবে আপনার সন্তানের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায় ।